Dhaka ০৩:৪৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১০ মে ২০২৪, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

লেখাপড়ায় মনোযোগ বৃদ্ধির উপায়

Reporter Name
  • আপডেট : ০৮:৪১:৫৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৫ মার্চ ২০২৪
  • / 46

পড়ার অভ্যাস আমাদের জ্ঞানের পরিধিকে বৃদ্ধি করে দেয়। তাই নিজেকে জ্ঞানের ভাণ্ডারের মধ্যে নিয়ে যেতে চাইলে এটিই সবচেয়ে উৎকৃষ্ট পন্থা। তবে পড়ার ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে মনোযোগ ধরে রাখা। লেখাপড়ায় আশানুরূপ ফল না পাওয়ার একটা কারণ হল যথেষ্ট মনোযোগী না হওয়া। আমরা যদি পড়ার সময় পূর্ণ মনোযোগ ধরে রাখতে পারি তাহলে সেই জ্ঞানার্জন সহজ ও স্থায়ী হয়।
কিন্তু মনোযোগ এমন একটা ব্যাপার যা খুব সহজে এলোমেলো হয়ে যায়। চোখের সামনে থাকা একটা অতি সামান্য জিনিস মনোযোগ নষ্ট করতে পারে। পড়ার ভিতরে একটি শব্দ বা বাক্য মনে হাযার ভাবনা সৃষ্টি করে মূল কাজ থেকে বিরত রাখতে পারে। পরিবেশের বিভিন্ন উপাদানও মনোযোগে ঘাটতি ঘটাতে পারে। তখন মনোযোগ বা মেন্টাল এনার্জির অপচয় হয়। হার্ভার্ডের একটা গবেষণা বলে, মানুষের মন ৪৭ ভাগ সময় মূল কাজটা ছেড়ে অন্য বিষয় নিয়ে ভাবতে থাকে। অর্থাৎ আপনি যদি এক ঘণ্টার জন্য পড়তে বসেন, তার ২৮ মিনিট অন্য চিন্তায় অপচয় করে ফেলেন।
আজকাল ইলেক্ট্রনিক্স ডিভাইসের যুগে ছাত্র-ছাত্রীরা ফেসবুক, গেইমস ইত্যাদি নিয়েই বেশি ব্যস্ত থাকতে পসন্দ করে। গেইমসের একেকটা লেভেল পার হওয়ার তুলনায় তাদের কাছে বই পড়া, মুখস্থ করা ইত্যাদি একেবারেই পানশে লাগে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে পড়তেও একঘেয়েমি সৃষ্টি হয়
এখন প্রশ্ন হল লেখাপড়ায় মনোযোগ বৃদ্ধির উপায় কী? তাহলে জেনে নেওয়া যাক, কিভাবে লেখাপড়ায় মনোযোগ বৃদ্ধি করা যায়।

১. লেখাপড়ায় সচেতনতা সৃষ্টি:

লেখাপড়া শুরু করার আগে ছাত্র-ছাত্রীদের বিশ্বাস রাখতে হবে যে, জীবনে লেখাপড়ার কোন বিকল্প নেই এবং আমি পারব ইনশাআল্লাহ। জীবনের উদ্দেশ্য যাই হোক সেটা পূরণ করতে হলে লেখাপড়া ভালো করে করতে হবে। এই সচেতনতাই লেখাপড়ায় অনুপ্রেরণা যোগাবে।

২. মনোযোগ বৃদ্ধির অনুশীলন:

কোন বিষয়ে দীর্ঘক্ষণ মনোযোগ ধরে রাখার জন্য অনুশীলন করতে হবে। এটি অনেকটা ব্যায়ামের মত। উদাহরণ স্বরূপ বড় সেকেন্ডের কাঁটা রয়েছে এমন একটা ঘড়ির সামনে বসে মনোযোগ স্থির করুন। সেকেন্ডের কাঁটার গতির উপর এমন ভাবে মনোযোগ দিন যেন এই মহাবিশ্বে এটাই আপনার একমাত্র কাজ। অন্য কোন চিন্তা ঢুকে যদি মনোযোগের সুতা ছিঁড়ে যায় তাহলে থামুন। অতঃপর আলতোভাবে মনোযোগ সেকেন্ডের কাঁটায় ফিরিয়ে আনুন এবং দীর্ঘক্ষণ আপনার মশোযোগ বজায় রাখতে চেষ্টা করুন।
সক্রিয় মনোযোগ রাখতে সবসময়ই মানসিক শক্তি প্রয়োগ করতে হবে।
তাই কোন সুনির্দিষ্ট কাজ থাকলে প্রথমে কানুন। কতটুকু সময় দিয়ে কাজটি করতে চান এবং কি পরিমাণ মনোযোগ এর পিছনে দিতে হবে তা ঠিক করুন। অতঃপর নির্দিষ্ট কাজের প্রতি মনোযোগ দিন, যখন বুঝতে পারবেন মনোযোগ নষ্ট হচ্ছে, অন্য কল্পনা করছেন তখন একটু বিরতি নিয়ে । পুনরায় মনোযোগ দিন। অল্প সময় নিয়ে শুরু করুন আস্তে আস্তে সময় বাড়ান। পুরো মনোযোগ দেওয়াকে অভ্যাসে পরিণত করুন।

৩. লক্ষ্য স্থির করা:

লক্ষ্যহীন কাজে কখনো মনোযোগ স্থির ও থাকে না। তাই সকল কাজের মত পড়ার ক্ষেত্রেও লক্ষ্য স্থির করা উচিত। উদ্দেশ্যহীনভাবে যদি বল ছোড়া হয় সে বল যেমন গোল পোস্টে ঢুকে না, তেমনি উদ্দেশ্যহীন ভাগে পড়লে সেই পড়ায় মনোযোগ আসে না। বিক্ষিপ্ত মনোযোগ চিন্তার বিভিন্ন দুয়ারে সুরে সুরে শূন্যহাতে ফিরে আসে। তাই নির্দিষ্ট লক্ষ্য সামনে রেখে লেখাপড়া করতে হবে।

৪. পড়ার জন্য আদর্শ স্থান নির্বাচন করতে হবে:

পড়ার জন্য আদর্শ স্থান নির্বাচন করা বরুরী। অনেকে বিছানায় বসে পড়তে পসন্দ করেন। এটা কখনো স্থায়ী হয় না। শরীরে অলসতা ভর করে জল্পতেই ঘুমের ভাব আসে। ফলে পড়ার ইচ্ছে শেষ হয়ে যায়। তাই বিছানায় পড়তে না বসে চেয়ার- টেবিলে পড়া উচিত। চেয়ারে বসে সামনের দিকে কিছুটা ঝুঁকে পড়লে মনোযোগ বেশি থাকে।

৫. পড়ার মনোরম পরিবেশ সৃষ্টি :

পড়াশোনায় মনোযোগ বাড়াতে একটি উপযোগী পরিবেশ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পড়া শুরু করার আগে অবশ্যই এমন একটি জায়গা নির্বাচন করা উচিত যেখানে পর্যাপ্ত আলো-বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা রয়েছে এবং সেই জায়গায় পড়াশোনা করে আত্মতৃপ্তিবোধ করা যায়। কেননা এই মনোভাব মস্তিস্কে সেট হলে পড়াশোনায় মনোযোগ বাড়বে। কোলাহল পূর্ণ পরিবেশ পরিত্যাগ করে নির্জন পরিবেশে অথবা লাইব্রেরীতে পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। পড়ার জিনিস পত্র বই, খাতা, কলম, পেন্সিল ইত্যাদি একেবারে সাথে নিয়ে বসা। যাতে পড়ার সময় বার বার পড়ার জায়গা ছেড়ে উঠতে না হয়। পড়ার টেবিলে বিভিন্ন ধরনের শো পিচ না রাখা, এতে পড়ার প্রতি মনোরোগ কম থাকে।

৬. কুরআন তেলাওয়াত ও দো’আ পড়া :

পড়াব শুরুতে ‘অভিযুবিল্লাহ’ পাঠ করে শয়তান থেকে আশ্রয় প্রার্থনা ও ‘বিসমিল্লাহ’ পাঠ করে আল্লাহর নামে পড়া শুরু করতে হবে। পড়তে বসার পূর্বে জ্ঞান বৃদ্ধির দো’আ করতে হবে, ب زدني علمًا আমার জ্ঞান বৃদ্ধি করে দাও’ (ত্বোহা ২৭/১১৪)। সম্ভব হলে প্রতিবার পড়তে বসে শুরুতে কুরআন তেলাওয়াত করা উত্তম। কুরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে বিক্ষিপ্ত মন দ্রুত শান্ত হয়।

৭. সহজ বিষয় দিয়ে শুরু করা :

সহজ এবং আনন্দদায়ক বিষয় দিয়ে পড়া শুরু করা উচিত। যে বিষয়টি পড়তে সবচেয়ে বেশি ভাল লাগে সেটিই কল্প অল্প করে পড়তে হবে। এভাবে পড়ায় একটা গতি সৃষ্টি হলে কঠিন বিষয়ে মনোযোগ দেওয়া সহজ হবে। একটা বইয়ে যদি অনেকগুলো অধ্যায় থাকে, অথবা কোন অধ্যায় যদি কঠিন মনে হয় তাহলে সে অধ্যায় ছোট ছোট ভাগে নিয়ে পড়া যেতে পারে। এতে চাপ প্রতি আগ্রহ তৈরি হবে। হবে এবহ পড়ার
মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞ মেখলা সরকার বলেন, ‘অনেক সময় দেখা যায় যে, কিছু শিক্ষার্থী ছনি আঁকতে । সেক্ষেত্রে ছবি আঁকা দিয়েই সে অঞ্চ করতে পারে। অনেক সাবজেক্ট থাকে যেখানে খুব বেশি মাথা খাটাতে হয় না, সেটা পড়তে পারে। এছাড়া অনেক সময় যে অধ্যায় আগে থেকেই পড়া আছে সেটি দিয়েয়ই শুরু করা যেতে পারে। এটি দিয়ে শুরু করলে যখন ঐ বিষয়ে শিক্ষার্থীর একটু দখল আসবে তখন তার মধ্যে ধীরে ধীরে আত্মবিশ্বাস তৈরি হবে এবং ভর কেটে পূর্ণ মনোযোগ দেওয়া সম্ভব হবে’।

৮. শব্দ করে পড়া :

অনেকে পড়তে পড়তে ভুলে যায়। হঠাৎ আনমনে পড়া বন্ধ করে নানা চিন্তার জগতে হারিয়ে যায়। অল্প-স্বল্প ভুলে যাওয়া কোন সমস্যা না। নিয়মিত পড়াশোনা চালিয়ে গেলে এটা চলে যার। এক্ষেত্রে শব্দ জোবে পড়লে মনোযোগ বাড়ে বলে জানান মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞ মেখনা সরকার। ঢুকতে সাহায্য করে। আমরা করে পড়ি তখন সেটা মাগায় সহজে

৯. বিগত দিদের পড়া রিভিশন দিতে হবে :

আগের দিন যে পড়াটা শেষ হয়েছে সেটি মনে রাখার জন্য সেই পড়াটা আবার একবার পড়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। মেখলা সরকার বলেন, ‘অনেক শিক্ষার্থী অভিযোগ করেন যে, আগের দিনের পড়ার ৫০০% বা ৯০%-ই তার মনে থাকে না। এটা স্বাভাবিক তাই মনে রাখতে হলে ঐ পড়াট আরেকবার পড়ার বিকল্প নেই। এভাবে চেষ্টা করতে থাকলে কিছু দিন পর সেটা তার মস্তিষে স্থায়ী হয়ে যায়। ফলে তার মধ্যে একটা আত্মবিশ্বাস তৈরি হয় এবং শতুন পড়ায় আগ্রহ সৃষ্টি হয়।

আরো পড়ুন এবং জানুন : মুসলমানদের প্রথম কিবলা ‘আল-কুদস’

১০. নির্দিষ্ট রুটিন অনুযায়ী লেখাপড়া করা: 

পড়ার প্রতি মনোযোগী হওয়ার উপারগুলোর মধ্যে এটি অন্যতম সেরা একটি কার্যকরী উপায়। পড়ার রুটিন থাকলে পড়ার প্রতি মস্তিষ্ক স্বয়ংক্রিয়ভাবে ঢাগ দেবে তাবীদ অনুভূত হবে। পড়তে বসার
রুটিন তৈরির পূর্বে মনে রাখতে হবে, রুটিনটি যেন অবশ্যই বাস্তবায়নযোগ্য বা সম্ভবপর হয়। রুটিন করে পড়লে কোন দিন কোন বিষয় নিয়ে পড়তে হবে সেই ডিজায় পড়তে হয় না। অনেকে আছে রুটিন তৈরি করে দুই একদিন রুটিন অনুযায়ী পড়ে আর পড়তে চায় না। এটা করা যাবে না।
মনে রাখতে হবে, প্রকৃতিক পরিবেশ রুটিন মাফিক চলে। সূর্য প্রতিদিন সকালে পৃথিবীকে আলোকিত করে। চাঁদ নির্দিষ্ট সময় পর পূর্ণিমার আলো অমাবস্যার অন্ধকার সৃষ্টি করে। ঠিক তেমনি নির্দিষ্ট সময়ে পড়তে বসা ও পড়া শেষ করা স্বক্তরা

১১. নিজের মত নোট বানিয়ে পড়া: 

মনোযোগ দিয়ে পড়ার জন্য অব্যশই প্রত্যেকটি বিষয়ের শোটি বসিয়ে নিতে হবে। নোট বানানো থাকলে পড়া শিখতে এবং বুঝতে সুবিধা থাকে এবং মুখস্থ পড়া সহজেই মনে থাকে। কারণ তাতে প্রয়োজনীয় অংশ রেখে অপ্রয়োজনীয় অংশ বাদ দেওয়া হয়। নির্দের ২৩ করে সাজানোর ফলে তা সহজে আত্মস্থ করা যায়। এতে রিভিশন (Revision) করতেও অনেক সুবিধা হয়।

১২. নির্দিষ্ট সময় পর পর বিরতি নিয়ে পড়া :

 

পড়াশোনার প্রতি একটানা বেশিক্ষণ মনোযোগ দেওয়া সম্ভব হয় না। কারণে একটানা পড়ার টেবিলে বসে না থেকে একটা নির্দিষ্ট সময় পর বিরতি দেওয়া উচিত। একটু বিরতি দিয়ে হাঁটা-চলা, পানি পান করে পুনরায় পড়া শুরু করলে মস্তিষ্কের ক্লান্তি দূর হয় এবং আবার আগের মতো সক্রিয় হয়ে কাজ করে। অথবা বন্ধুদের সাথে কিছুক্ষণ কথা বলা যেতে পারে।

১৩. যখন লেখাপড়া করার মনোযোগ আসে তখন পড়া:

দিনের সময়ে পড়ার ইচ্ছা কারোই থাকে না। একই সময়ে সবার পড়াশোনা করার মন থাকে না। জোর করে টেবিলে বসে থাকলে পড়র প্রতি মনোযোগ থাকে না। বরং লেখাপড়ার প্রতি বিরক্তি জন্মায়। তাই যেই সময় পড়ায় মনোযোগ আসে সেই সময় পড়তে বসতে হবে। বিশেষজ্ঞদের মতে নিস্তদ্ধ ও নীরণ অবস্থায় পড়তে মন বসে অধিকাংশের জন্য সকাল-সন্ধ্যা পড়ার জন্য আদর্শ সময়।

১৪, পড়ার সময় মোবাইল ফোন দূরে রাখা :

মোবাইল ফোন পড়াশোনার
ক্ষেত্রে বড় পড়ার সময় মোবাইল ফোন দূরে রাখতে হবে। মোবাইন ফোনে আসা বিভিন্না নোটিফিকেশন পড়ায় বাধা সৃষ্টি করে, পড়ার লতি মনোযোগও বিচ্ছিন্ন করে। আমাদের দৈনন্দিন কাউকে কল করা, মেইল চেক করা ইত্যাদি এই কাজগুলো নির্দিষ্ট সময়ে করলে অনেক সময় বেঁচে যাবে। সাথে সাথে কাজের প্রতি মনোযোগও বাড়বে।

১৫. পর্যাপ্ত ঘুমানো :

শরীরের অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যদের মত মস্তিষ্কও ক্লাড হয়। তখন ব্রেনকে ঠান্ডা ও সতেজ রাখতে পর্যাপ্ত ঘুম প্রয়োজন। ডাক্তারের মতে দিশের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রাতের ঘুমই হলো থেকে উত্তম ও উপকারী। যা সারাদিনের সব চিন্তা ভাবনা থেকে ব্রেনকে ঠান্ডা রাখে। তাই লেখাপড়ায় মনোযোগী হতে হলে রাতে পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম খুবই প্রয়োজন। অনেকে পড়ার ফাঁকে একটু বিশ্রামের জন্য ফেসবুকে ঢোকে বা গেমস যেনে। এতে আসলে বিশ্রাম হয় না। বরং মস্তিষ্কে চাপ বৃদ্ধি করে।

১৬. ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার:

পড়ুয়াদের যে যথেষ্ট ভিটামিন দরকার সে কথা কে না জানে? তবে শুধু জানা নয়, কাজে পরিণত করতে হবে। তাই ছাত্র-ছাত্রীদের চাই যথেষ্ট ভিটামিন, আমিষ, শর্করা ও পুষ্টি সমৃদ্ধ স্বাস্থ্যসম্মত খাবার ও পানীয়। সবুজ শাক-সবজি, ফল মূল, বিভিন্ন বাদাম বিশেষ করে আখরোট, সামুদ্রিক মাহ, দুধ, ডার্ক চকলেট ইত্যাদি মস্তিষ্ক সতেজ রাখতে ও মনোযোগ বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। পড়াশোনার মাঝে পাকা টমেটো বা টমেটোর জুসও খাওয়া যেতে পারে। মিষ্টি খেলে মস্তিস্কের ভার্যক্ষমতা বাড়ে। মিষ্টি জাতীয় খাবার ব্রেইনকে সতেজ এবং সুস্থ রানে। আর অবশ্যই পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করতে হবে। এতে শরীর সুস্থ ও মন ভালো
থাকবে এবং পড়াশোনায় মন বসবে। ফাস্টফুড জাতীয় খাবার যথা সম্ভব এড়িয়ে চলতে হবে। এতে ব্যবহার করা হয় রকম রাসায়নিক উপাদান, যা অনেকের ক্ষেত্রেই অ্যালার্জির কারণ হয়ে থাকে এবং মনোযোগ এবং শরীরে বিরূপ প্রভাব ফেলে। তাই এসব হওয়া উচিত।

 

আরো পড়ুন এবং জানুন : ডিম নিয়ে যত প্রশ্ন

১৭. নিয়মিত খেলাধুলা :

বা ব্যায়াম করা লেখাপড়ার পাশাপাশি খেলাধুলাও প্রয়োজন। গবেষকরা করেন, শারীরিক পরিশ্রম অর্থাৎ খেলাধুনা না ব্যায়াম মানুষকে যে কোন চাপ থেকে সহজে মুক্তি দিতে সাহায্য করে। ব্যায়াম বা খেলাধুলা করার ফলে শরীরে হরমোনের প্রকাশ ঘটে কিছুটা অন্যভাবে স্বাভাবিকভাবে তার প্রভাব পড়ে মনোযোগেও। খেলাধুলা লেখাপড়ায় মনোযোগ বাড়াতে মুখ্য ভূমিকা রাখে। সে কারণেই প্রতি
স্কুল কলেজ ও মাদ্রাসায় ক্রীড়া প্রতিযোগিতা করা হয়ে থাকে। ১৮. বেশি বেশি আল্লাহর নিকট দো’আ করা। সকল কাজে মানুষের চেষ্টার পাশাপাশি আল্লাহর অনুগ্রহ প্রয়োজন। আল্লাহ না চাইলে লেখাপড়াসহ কোন কাজেই জন্যে করা সম্ভব নয়। তাই আল্লাহর নিকট দো’আ করতে হবে, যেন আল্লাহ আমাদের মনোযোগকে লেখাপড়ার প্রতি নিবন্ধ করে দেন। এজন্য সকাল-সন্ধ্যায় এই দো’আটি পাঠ করতে হবে,
أسألك علما نافعا وعملاً مظيلاً وراقا عيباً তোমার নিকটে উপকাৰী আন, করুণসংযোগ্য আমল ও পবিত্র কর্মী প্রার্থনা করছি (ইক্যু মাজাহ, মিশকাত হা/২৪৯৮)। আল্লাহ তা’আলা আমাদের উপকারী জ্ঞান ও প্রজ্ঞা দান করুন-আমীন।

শেয়ার করুন

লেখাপড়ায় মনোযোগ বৃদ্ধির উপায়

আপডেট : ০৮:৪১:৫৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৫ মার্চ ২০২৪

পড়ার অভ্যাস আমাদের জ্ঞানের পরিধিকে বৃদ্ধি করে দেয়। তাই নিজেকে জ্ঞানের ভাণ্ডারের মধ্যে নিয়ে যেতে চাইলে এটিই সবচেয়ে উৎকৃষ্ট পন্থা। তবে পড়ার ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে মনোযোগ ধরে রাখা। লেখাপড়ায় আশানুরূপ ফল না পাওয়ার একটা কারণ হল যথেষ্ট মনোযোগী না হওয়া। আমরা যদি পড়ার সময় পূর্ণ মনোযোগ ধরে রাখতে পারি তাহলে সেই জ্ঞানার্জন সহজ ও স্থায়ী হয়।
কিন্তু মনোযোগ এমন একটা ব্যাপার যা খুব সহজে এলোমেলো হয়ে যায়। চোখের সামনে থাকা একটা অতি সামান্য জিনিস মনোযোগ নষ্ট করতে পারে। পড়ার ভিতরে একটি শব্দ বা বাক্য মনে হাযার ভাবনা সৃষ্টি করে মূল কাজ থেকে বিরত রাখতে পারে। পরিবেশের বিভিন্ন উপাদানও মনোযোগে ঘাটতি ঘটাতে পারে। তখন মনোযোগ বা মেন্টাল এনার্জির অপচয় হয়। হার্ভার্ডের একটা গবেষণা বলে, মানুষের মন ৪৭ ভাগ সময় মূল কাজটা ছেড়ে অন্য বিষয় নিয়ে ভাবতে থাকে। অর্থাৎ আপনি যদি এক ঘণ্টার জন্য পড়তে বসেন, তার ২৮ মিনিট অন্য চিন্তায় অপচয় করে ফেলেন।
আজকাল ইলেক্ট্রনিক্স ডিভাইসের যুগে ছাত্র-ছাত্রীরা ফেসবুক, গেইমস ইত্যাদি নিয়েই বেশি ব্যস্ত থাকতে পসন্দ করে। গেইমসের একেকটা লেভেল পার হওয়ার তুলনায় তাদের কাছে বই পড়া, মুখস্থ করা ইত্যাদি একেবারেই পানশে লাগে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে পড়তেও একঘেয়েমি সৃষ্টি হয়
এখন প্রশ্ন হল লেখাপড়ায় মনোযোগ বৃদ্ধির উপায় কী? তাহলে জেনে নেওয়া যাক, কিভাবে লেখাপড়ায় মনোযোগ বৃদ্ধি করা যায়।

১. লেখাপড়ায় সচেতনতা সৃষ্টি:

লেখাপড়া শুরু করার আগে ছাত্র-ছাত্রীদের বিশ্বাস রাখতে হবে যে, জীবনে লেখাপড়ার কোন বিকল্প নেই এবং আমি পারব ইনশাআল্লাহ। জীবনের উদ্দেশ্য যাই হোক সেটা পূরণ করতে হলে লেখাপড়া ভালো করে করতে হবে। এই সচেতনতাই লেখাপড়ায় অনুপ্রেরণা যোগাবে।

২. মনোযোগ বৃদ্ধির অনুশীলন:

কোন বিষয়ে দীর্ঘক্ষণ মনোযোগ ধরে রাখার জন্য অনুশীলন করতে হবে। এটি অনেকটা ব্যায়ামের মত। উদাহরণ স্বরূপ বড় সেকেন্ডের কাঁটা রয়েছে এমন একটা ঘড়ির সামনে বসে মনোযোগ স্থির করুন। সেকেন্ডের কাঁটার গতির উপর এমন ভাবে মনোযোগ দিন যেন এই মহাবিশ্বে এটাই আপনার একমাত্র কাজ। অন্য কোন চিন্তা ঢুকে যদি মনোযোগের সুতা ছিঁড়ে যায় তাহলে থামুন। অতঃপর আলতোভাবে মনোযোগ সেকেন্ডের কাঁটায় ফিরিয়ে আনুন এবং দীর্ঘক্ষণ আপনার মশোযোগ বজায় রাখতে চেষ্টা করুন।
সক্রিয় মনোযোগ রাখতে সবসময়ই মানসিক শক্তি প্রয়োগ করতে হবে।
তাই কোন সুনির্দিষ্ট কাজ থাকলে প্রথমে কানুন। কতটুকু সময় দিয়ে কাজটি করতে চান এবং কি পরিমাণ মনোযোগ এর পিছনে দিতে হবে তা ঠিক করুন। অতঃপর নির্দিষ্ট কাজের প্রতি মনোযোগ দিন, যখন বুঝতে পারবেন মনোযোগ নষ্ট হচ্ছে, অন্য কল্পনা করছেন তখন একটু বিরতি নিয়ে । পুনরায় মনোযোগ দিন। অল্প সময় নিয়ে শুরু করুন আস্তে আস্তে সময় বাড়ান। পুরো মনোযোগ দেওয়াকে অভ্যাসে পরিণত করুন।

৩. লক্ষ্য স্থির করা:

লক্ষ্যহীন কাজে কখনো মনোযোগ স্থির ও থাকে না। তাই সকল কাজের মত পড়ার ক্ষেত্রেও লক্ষ্য স্থির করা উচিত। উদ্দেশ্যহীনভাবে যদি বল ছোড়া হয় সে বল যেমন গোল পোস্টে ঢুকে না, তেমনি উদ্দেশ্যহীন ভাগে পড়লে সেই পড়ায় মনোযোগ আসে না। বিক্ষিপ্ত মনোযোগ চিন্তার বিভিন্ন দুয়ারে সুরে সুরে শূন্যহাতে ফিরে আসে। তাই নির্দিষ্ট লক্ষ্য সামনে রেখে লেখাপড়া করতে হবে।

৪. পড়ার জন্য আদর্শ স্থান নির্বাচন করতে হবে:

পড়ার জন্য আদর্শ স্থান নির্বাচন করা বরুরী। অনেকে বিছানায় বসে পড়তে পসন্দ করেন। এটা কখনো স্থায়ী হয় না। শরীরে অলসতা ভর করে জল্পতেই ঘুমের ভাব আসে। ফলে পড়ার ইচ্ছে শেষ হয়ে যায়। তাই বিছানায় পড়তে না বসে চেয়ার- টেবিলে পড়া উচিত। চেয়ারে বসে সামনের দিকে কিছুটা ঝুঁকে পড়লে মনোযোগ বেশি থাকে।

৫. পড়ার মনোরম পরিবেশ সৃষ্টি :

পড়াশোনায় মনোযোগ বাড়াতে একটি উপযোগী পরিবেশ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পড়া শুরু করার আগে অবশ্যই এমন একটি জায়গা নির্বাচন করা উচিত যেখানে পর্যাপ্ত আলো-বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা রয়েছে এবং সেই জায়গায় পড়াশোনা করে আত্মতৃপ্তিবোধ করা যায়। কেননা এই মনোভাব মস্তিস্কে সেট হলে পড়াশোনায় মনোযোগ বাড়বে। কোলাহল পূর্ণ পরিবেশ পরিত্যাগ করে নির্জন পরিবেশে অথবা লাইব্রেরীতে পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। পড়ার জিনিস পত্র বই, খাতা, কলম, পেন্সিল ইত্যাদি একেবারে সাথে নিয়ে বসা। যাতে পড়ার সময় বার বার পড়ার জায়গা ছেড়ে উঠতে না হয়। পড়ার টেবিলে বিভিন্ন ধরনের শো পিচ না রাখা, এতে পড়ার প্রতি মনোরোগ কম থাকে।

৬. কুরআন তেলাওয়াত ও দো’আ পড়া :

পড়াব শুরুতে ‘অভিযুবিল্লাহ’ পাঠ করে শয়তান থেকে আশ্রয় প্রার্থনা ও ‘বিসমিল্লাহ’ পাঠ করে আল্লাহর নামে পড়া শুরু করতে হবে। পড়তে বসার পূর্বে জ্ঞান বৃদ্ধির দো’আ করতে হবে, ب زدني علمًا আমার জ্ঞান বৃদ্ধি করে দাও’ (ত্বোহা ২৭/১১৪)। সম্ভব হলে প্রতিবার পড়তে বসে শুরুতে কুরআন তেলাওয়াত করা উত্তম। কুরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে বিক্ষিপ্ত মন দ্রুত শান্ত হয়।

৭. সহজ বিষয় দিয়ে শুরু করা :

সহজ এবং আনন্দদায়ক বিষয় দিয়ে পড়া শুরু করা উচিত। যে বিষয়টি পড়তে সবচেয়ে বেশি ভাল লাগে সেটিই কল্প অল্প করে পড়তে হবে। এভাবে পড়ায় একটা গতি সৃষ্টি হলে কঠিন বিষয়ে মনোযোগ দেওয়া সহজ হবে। একটা বইয়ে যদি অনেকগুলো অধ্যায় থাকে, অথবা কোন অধ্যায় যদি কঠিন মনে হয় তাহলে সে অধ্যায় ছোট ছোট ভাগে নিয়ে পড়া যেতে পারে। এতে চাপ প্রতি আগ্রহ তৈরি হবে। হবে এবহ পড়ার
মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞ মেখলা সরকার বলেন, ‘অনেক সময় দেখা যায় যে, কিছু শিক্ষার্থী ছনি আঁকতে । সেক্ষেত্রে ছবি আঁকা দিয়েই সে অঞ্চ করতে পারে। অনেক সাবজেক্ট থাকে যেখানে খুব বেশি মাথা খাটাতে হয় না, সেটা পড়তে পারে। এছাড়া অনেক সময় যে অধ্যায় আগে থেকেই পড়া আছে সেটি দিয়েয়ই শুরু করা যেতে পারে। এটি দিয়ে শুরু করলে যখন ঐ বিষয়ে শিক্ষার্থীর একটু দখল আসবে তখন তার মধ্যে ধীরে ধীরে আত্মবিশ্বাস তৈরি হবে এবং ভর কেটে পূর্ণ মনোযোগ দেওয়া সম্ভব হবে’।

৮. শব্দ করে পড়া :

অনেকে পড়তে পড়তে ভুলে যায়। হঠাৎ আনমনে পড়া বন্ধ করে নানা চিন্তার জগতে হারিয়ে যায়। অল্প-স্বল্প ভুলে যাওয়া কোন সমস্যা না। নিয়মিত পড়াশোনা চালিয়ে গেলে এটা চলে যার। এক্ষেত্রে শব্দ জোবে পড়লে মনোযোগ বাড়ে বলে জানান মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞ মেখনা সরকার। ঢুকতে সাহায্য করে। আমরা করে পড়ি তখন সেটা মাগায় সহজে

৯. বিগত দিদের পড়া রিভিশন দিতে হবে :

আগের দিন যে পড়াটা শেষ হয়েছে সেটি মনে রাখার জন্য সেই পড়াটা আবার একবার পড়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। মেখলা সরকার বলেন, ‘অনেক শিক্ষার্থী অভিযোগ করেন যে, আগের দিনের পড়ার ৫০০% বা ৯০%-ই তার মনে থাকে না। এটা স্বাভাবিক তাই মনে রাখতে হলে ঐ পড়াট আরেকবার পড়ার বিকল্প নেই। এভাবে চেষ্টা করতে থাকলে কিছু দিন পর সেটা তার মস্তিষে স্থায়ী হয়ে যায়। ফলে তার মধ্যে একটা আত্মবিশ্বাস তৈরি হয় এবং শতুন পড়ায় আগ্রহ সৃষ্টি হয়।

আরো পড়ুন এবং জানুন : মুসলমানদের প্রথম কিবলা ‘আল-কুদস’

১০. নির্দিষ্ট রুটিন অনুযায়ী লেখাপড়া করা: 

পড়ার প্রতি মনোযোগী হওয়ার উপারগুলোর মধ্যে এটি অন্যতম সেরা একটি কার্যকরী উপায়। পড়ার রুটিন থাকলে পড়ার প্রতি মস্তিষ্ক স্বয়ংক্রিয়ভাবে ঢাগ দেবে তাবীদ অনুভূত হবে। পড়তে বসার
রুটিন তৈরির পূর্বে মনে রাখতে হবে, রুটিনটি যেন অবশ্যই বাস্তবায়নযোগ্য বা সম্ভবপর হয়। রুটিন করে পড়লে কোন দিন কোন বিষয় নিয়ে পড়তে হবে সেই ডিজায় পড়তে হয় না। অনেকে আছে রুটিন তৈরি করে দুই একদিন রুটিন অনুযায়ী পড়ে আর পড়তে চায় না। এটা করা যাবে না।
মনে রাখতে হবে, প্রকৃতিক পরিবেশ রুটিন মাফিক চলে। সূর্য প্রতিদিন সকালে পৃথিবীকে আলোকিত করে। চাঁদ নির্দিষ্ট সময় পর পূর্ণিমার আলো অমাবস্যার অন্ধকার সৃষ্টি করে। ঠিক তেমনি নির্দিষ্ট সময়ে পড়তে বসা ও পড়া শেষ করা স্বক্তরা

১১. নিজের মত নোট বানিয়ে পড়া: 

মনোযোগ দিয়ে পড়ার জন্য অব্যশই প্রত্যেকটি বিষয়ের শোটি বসিয়ে নিতে হবে। নোট বানানো থাকলে পড়া শিখতে এবং বুঝতে সুবিধা থাকে এবং মুখস্থ পড়া সহজেই মনে থাকে। কারণ তাতে প্রয়োজনীয় অংশ রেখে অপ্রয়োজনীয় অংশ বাদ দেওয়া হয়। নির্দের ২৩ করে সাজানোর ফলে তা সহজে আত্মস্থ করা যায়। এতে রিভিশন (Revision) করতেও অনেক সুবিধা হয়।

১২. নির্দিষ্ট সময় পর পর বিরতি নিয়ে পড়া :

 

পড়াশোনার প্রতি একটানা বেশিক্ষণ মনোযোগ দেওয়া সম্ভব হয় না। কারণে একটানা পড়ার টেবিলে বসে না থেকে একটা নির্দিষ্ট সময় পর বিরতি দেওয়া উচিত। একটু বিরতি দিয়ে হাঁটা-চলা, পানি পান করে পুনরায় পড়া শুরু করলে মস্তিষ্কের ক্লান্তি দূর হয় এবং আবার আগের মতো সক্রিয় হয়ে কাজ করে। অথবা বন্ধুদের সাথে কিছুক্ষণ কথা বলা যেতে পারে।

১৩. যখন লেখাপড়া করার মনোযোগ আসে তখন পড়া:

দিনের সময়ে পড়ার ইচ্ছা কারোই থাকে না। একই সময়ে সবার পড়াশোনা করার মন থাকে না। জোর করে টেবিলে বসে থাকলে পড়র প্রতি মনোযোগ থাকে না। বরং লেখাপড়ার প্রতি বিরক্তি জন্মায়। তাই যেই সময় পড়ায় মনোযোগ আসে সেই সময় পড়তে বসতে হবে। বিশেষজ্ঞদের মতে নিস্তদ্ধ ও নীরণ অবস্থায় পড়তে মন বসে অধিকাংশের জন্য সকাল-সন্ধ্যা পড়ার জন্য আদর্শ সময়।

১৪, পড়ার সময় মোবাইল ফোন দূরে রাখা :

মোবাইল ফোন পড়াশোনার
ক্ষেত্রে বড় পড়ার সময় মোবাইল ফোন দূরে রাখতে হবে। মোবাইন ফোনে আসা বিভিন্না নোটিফিকেশন পড়ায় বাধা সৃষ্টি করে, পড়ার লতি মনোযোগও বিচ্ছিন্ন করে। আমাদের দৈনন্দিন কাউকে কল করা, মেইল চেক করা ইত্যাদি এই কাজগুলো নির্দিষ্ট সময়ে করলে অনেক সময় বেঁচে যাবে। সাথে সাথে কাজের প্রতি মনোযোগও বাড়বে।

১৫. পর্যাপ্ত ঘুমানো :

শরীরের অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যদের মত মস্তিষ্কও ক্লাড হয়। তখন ব্রেনকে ঠান্ডা ও সতেজ রাখতে পর্যাপ্ত ঘুম প্রয়োজন। ডাক্তারের মতে দিশের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রাতের ঘুমই হলো থেকে উত্তম ও উপকারী। যা সারাদিনের সব চিন্তা ভাবনা থেকে ব্রেনকে ঠান্ডা রাখে। তাই লেখাপড়ায় মনোযোগী হতে হলে রাতে পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম খুবই প্রয়োজন। অনেকে পড়ার ফাঁকে একটু বিশ্রামের জন্য ফেসবুকে ঢোকে বা গেমস যেনে। এতে আসলে বিশ্রাম হয় না। বরং মস্তিষ্কে চাপ বৃদ্ধি করে।

১৬. ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার:

পড়ুয়াদের যে যথেষ্ট ভিটামিন দরকার সে কথা কে না জানে? তবে শুধু জানা নয়, কাজে পরিণত করতে হবে। তাই ছাত্র-ছাত্রীদের চাই যথেষ্ট ভিটামিন, আমিষ, শর্করা ও পুষ্টি সমৃদ্ধ স্বাস্থ্যসম্মত খাবার ও পানীয়। সবুজ শাক-সবজি, ফল মূল, বিভিন্ন বাদাম বিশেষ করে আখরোট, সামুদ্রিক মাহ, দুধ, ডার্ক চকলেট ইত্যাদি মস্তিষ্ক সতেজ রাখতে ও মনোযোগ বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। পড়াশোনার মাঝে পাকা টমেটো বা টমেটোর জুসও খাওয়া যেতে পারে। মিষ্টি খেলে মস্তিস্কের ভার্যক্ষমতা বাড়ে। মিষ্টি জাতীয় খাবার ব্রেইনকে সতেজ এবং সুস্থ রানে। আর অবশ্যই পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করতে হবে। এতে শরীর সুস্থ ও মন ভালো
থাকবে এবং পড়াশোনায় মন বসবে। ফাস্টফুড জাতীয় খাবার যথা সম্ভব এড়িয়ে চলতে হবে। এতে ব্যবহার করা হয় রকম রাসায়নিক উপাদান, যা অনেকের ক্ষেত্রেই অ্যালার্জির কারণ হয়ে থাকে এবং মনোযোগ এবং শরীরে বিরূপ প্রভাব ফেলে। তাই এসব হওয়া উচিত।

 

আরো পড়ুন এবং জানুন : ডিম নিয়ে যত প্রশ্ন

১৭. নিয়মিত খেলাধুলা :

বা ব্যায়াম করা লেখাপড়ার পাশাপাশি খেলাধুলাও প্রয়োজন। গবেষকরা করেন, শারীরিক পরিশ্রম অর্থাৎ খেলাধুনা না ব্যায়াম মানুষকে যে কোন চাপ থেকে সহজে মুক্তি দিতে সাহায্য করে। ব্যায়াম বা খেলাধুলা করার ফলে শরীরে হরমোনের প্রকাশ ঘটে কিছুটা অন্যভাবে স্বাভাবিকভাবে তার প্রভাব পড়ে মনোযোগেও। খেলাধুলা লেখাপড়ায় মনোযোগ বাড়াতে মুখ্য ভূমিকা রাখে। সে কারণেই প্রতি
স্কুল কলেজ ও মাদ্রাসায় ক্রীড়া প্রতিযোগিতা করা হয়ে থাকে। ১৮. বেশি বেশি আল্লাহর নিকট দো’আ করা। সকল কাজে মানুষের চেষ্টার পাশাপাশি আল্লাহর অনুগ্রহ প্রয়োজন। আল্লাহ না চাইলে লেখাপড়াসহ কোন কাজেই জন্যে করা সম্ভব নয়। তাই আল্লাহর নিকট দো’আ করতে হবে, যেন আল্লাহ আমাদের মনোযোগকে লেখাপড়ার প্রতি নিবন্ধ করে দেন। এজন্য সকাল-সন্ধ্যায় এই দো’আটি পাঠ করতে হবে,
أسألك علما نافعا وعملاً مظيلاً وراقا عيباً তোমার নিকটে উপকাৰী আন, করুণসংযোগ্য আমল ও পবিত্র কর্মী প্রার্থনা করছি (ইক্যু মাজাহ, মিশকাত হা/২৪৯৮)। আল্লাহ তা’আলা আমাদের উপকারী জ্ঞান ও প্রজ্ঞা দান করুন-আমীন।