ইউপি চেয়ারম্যান বেলালের পদত্যাগে মিশ্রপ্রতিক্রিয়া
নিউজ ডেস্ক
- আপডেট : ০২:১৯:১৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ এপ্রিল ২০২৪
- / 109
রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার দেওপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) আলোচিত চেয়ারম্যান বেলাল উদ্দিন সোহেল পদত্যাগ করেছেন। জানা গেছে, উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হবার জন্য তিনি পদত্যাগ করেছেন। গত ৮ এপ্রিল বেলাল উদ্দিন সোহেল গোদাগাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) দপ্তরে উপস্থিত হয়ে চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগপত্র জমা দেন। প্রাথমিক প্রক্রিয়া শেষে ৯ এপ্রিল বেলাল সোহেলের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করে দেওপাড়া ইউপি চেয়ারম্যানের পদটি শূন্য ঘোষণা করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গোদাগাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আতিকুল ইসলাম। জানা গেছে, বেলাল উদ্দিন সোহেল গোদাগাড়ী উপজেলা যুবলীগের অর্থবিষয়ক সম্পাদক। এদিকে উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ও বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি রবিউল আলম, জামায়াতের রাজশাহী পশ্চিম জেলা আমির মাওলানা আব্দুল খালেক ও বিএনপি নেতা সাজেদুর রহমান মার্কনী আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে নিজেদের প্রার্থিতা ঘোষণা করেছেন। আওয়ামী লীগের তিন প্রার্থীর মধ্যে চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলমকে সমর্থন দিয়ে তার পক্ষে ভোট করার জন্য নেতাকর্মীদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন স্থানীয় সাংসদ আলহাজ্ব ওমর ফারুক চৌধুরী। এদিকে দেওপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান বেলাল উদ্দিন সোহেলের পদত্যাগ নিয়ে জনমনে মিশ্রপ্রতিক্রিয়া দেখ দিয়েছে, বইছে মুখরোচক নানা গুঞ্জন। স্থানীয়রা বলছে, সাংসদ আলহাজ্ব ওমর ফারুক চৌধুরীর বদৌলতে জিরো থেকে হিরো বা শূণ্য থেকে (ধনকুব) কোটিপতি।অথচ সেই সাংসদের সমর্থিত প্রার্থীর বিপক্ষে বা সাংসদের সিদ্ধান্ত অবজ্ঞা করে তার নির্বাচন করা অনেকটা ঘোড়া ডিঙিয়ে ঘাস খাওয়ার সামিল। এতে তার আম ছালা দুটোই হারানোর শঙ্কা রয়েছে। কারণ উপজেলা নির্বাচনে বিজয়ী হতে যে পরিমাণ কর্মী বাহিনী, শিক্ষাগত যোগ্যতা ও উপজেলা জুড়ে জনসমর্থন প্রয়োজন সেটা তার নাই। আবার কেউ কেউ বলছে,এমপির সিদ্ধান্ত অবজ্ঞা করে তিনি নির্বাচন করছেন, কাজেই যদি বেলালকে বিজয়ী করা হয় তাহলে এমপিকে ছোট করা হবে। আবার অনেকে বলছে, গত দেওপাড়া ইউপি নির্বাচনে এমপি ফারুক চৌধুরী কঠিন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে বেলালকে প্রার্থী ও বিজয়ী করেছিলেন।কিন্ত্ত ইউপি চেয়ারম্যানের মেয়াদ শেষ না করেই বেলাল উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন। যেখানে এমপি এই নির্বাচনে জাহাঙ্গীর আলমকে সমর্থন করেছেন, সেখানে এমপির সমর্থিত প্রার্থীর বিপক্ষে বেলালের প্রার্থী হওয়া মানেই, তিনি এমপিকে অবজ্ঞা করেছেন। তাদের ভাষ্য বেলালের সামনে আরো অনেক পথ রয়েছে, হুট করেই তিনি যদি উপজেলা চেয়ারম্যান হন, তাহলে আগামিতে তিনি যে এমপির টিকেট চাইবেন না তার নিশ্চয়তা কি ? এই বিষয়টি তৃণমুলের নেতাকর্মীরা সহজভাবে মেনে নিতে পারছে না বলে একাধিক সুত্র নিশ্চিত করেছে। এদিকে সাধারণ ভোটারদের ভাষ্য, এটা স্থানীয় নির্বাচন সরকার পরিবর্তনের নির্বাচন নয়। কাজেই এই নির্বাচনে সাংসদের সমর্থিত প্রার্থীর বিজয় নিশ্চিত করতে না পারলে তারা উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত হবেন। যেটা সচেতন কোনো মানুষের কাম্য হতে পারে না। এছাড়াও এটা সাংসদ আলহাজ্ব ওমর ফারুক চৌধুরীর প্রেষ্টিজ। তাই তারা এবার কারো কোনো মোহে বা প্ররোচনায় পড়ে এমপি সমর্থক প্রার্থীর বিপক্ষে ভোট প্রয়োগ করবেন না। তাদের অভিমত, ভুল থাকতে পারে প্রার্থী বা কোনো নেতাকর্মীর। কিন্তু মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতিনিধি স্থানীয় সাংসদ ফারুক চৌধুরী কোনো ভুল করেননি। ফলে তাদের সম্মান রক্ষায় তার সমর্থিত প্রার্থীর বিজয় ব্যতিত বিকল্প নাই। কারণ তার সমর্থিত প্রার্থীর পরাজয় ঘটলে কেউ প্রার্থীর পরাজয়ের কথা বলবে না, বলবে দলের বা এমপির পরাজয় ঘটেছে, আর এটা আওয়ামী লীগের আদর্শিক কোনো নেতা বা কর্মী-সমর্থকের কাম্য হতে পারে না ? অপরদিকে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা বলছে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যারা অভিমান বা মোহের বসে নৌকার বিপক্ষে ভোট দিয়েছিল। তারা সেই ভুল অনুধাবন করে এখন অনুতপ্ত। এবার তারা শপথ নিয়েছে উপজেলা নির্বাচনে সরকার সমর্থিত প্রার্থীকে বিপুল ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী করে তারা তাদের সেই ভুল শোধরাতে চাই।